রাস্তার
বিষণ্ণ গল্প
অনেকদিন
আগে আমার একজনের কাছে যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু
কোনও কারণে যাওয়া মুলতুবি রেখেছিলাম।
আসলে
এতটা তলিয়ে ভাবিনি, ভাবতাম যাওয়া তো যে-কোনও সময়ই যায়।
এখনই
তো দরকার নেই।
তারপর
যা হয়...রাস্তাটা হারিয়েই গেল।
এখন
সূর্যাস্তের রং দেখলে মনে হয়
যে-কোনও
আস্থা আসলে সমস্ত জোকারের মুখোশের চেয়েও জীর্ণ।
সে
বয়সে অত বোঝা যেত না।
তাই
একদিন আমার এত বিপদে-আপদে পাশে থাকা
এত
আমার এত সবার চেনা রাস্তাটা হারিয়েই গেল।
প্রথম-প্রথম
আশা ছাড়িনি।
দেখা
আর শোনার মাঝে এদিক-ওদিক খোঁজ নিতাম।
একে-ওকে
জিজ্ঞেসও করে দেখেছি।
কিন্তু
বিদ্রুপের কাছে তো কোনও ওম থাকে না।
উত্তর
থাকে না নম্র ফুলদানিদের কাছেও।
তাই
রাস্তাটা প্রাকৃতিক নিয়মে হারিয়েই যাচ্ছিল।
রোজ
একটু একটু করে...
খুব
জোরে একটানা জ্বলে মোম দপ করে নিভে যাচ্ছিল।
কথার
ভিতর থেকে কথারা কেবল ফিকে হচ্ছিল।
আমরা
হাসতে-হাসতে তিরতিরে ফড়িংয়ের ডানা ছিঁড়ে নিচ্ছিলাম
আমরা
কাঁদতে-কাঁদতে আকাশে রংবেরঙের গ্যাসবেলুন ছুঁড়ে দিচ্ছিলাম।
তবে
সম্পূর্ণ ভুলেও যাইনি।
হঠাৎ
তীব্র আলোয় কোনও বাস্তব ছুরি অপার্থিব ঝলসে উঠলে
টের
পেতাম তার হাতছানি সেরকমই করুণ হয়ে আছে।
তার
সংকেত তেমনই দুর্গম হয়ে আছে।
কিন্তু
এ আশ্চর্য দেখো, আমার তো একজনের কাছে যাওয়ার কথা ছিল।
রাস্তা
কীভাবে চওড়া হতে-হতে
এতটা
এতটাই অধিকার করে নিল।
অথচ
কোনও চোখে ছায়া পড়ল না।
অনিবার্য
রাস্তা পেরতে গিয়ে আবার মনে হল
সেদিন
ভেঙে যাওয়া কাঠের সিঁড়ি দিয়ে সে চলেছে
ধীর লয়ে...
এদিকে গলির কোণে পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়াদের
চেষ্টা জারি ছিল।
প্রাণপণে ওরা ভিন্নার্থক রং বদল
চাইছিল।
একে অন্যের অভিমুখে, স্বপ্ন থেকে
তন্দ্রাভ রক্তিমতার দিকে।
যে ঝড়ের সামনে দাঁড়ালে সব মুষ্টিবদ্ধ
হাত আলগা হয়ে যায়
সেদিন বাতাসে তেমনই কোনও সংকেত ছিল।
তবে বিদ্যুৎ চমকাতে সমস্ত বর্ণান্ধ
রঙিন চশমা ঠিক পরে নিয়েছিল।
অপমৃত্যুর ফাঁক দিয়ে নিপুণ গলে,
ট্রাফিক পুলিশের সসম্ভ্রম চাউনি ডিঙিয়ে
শুকনো বিষাদ পেরিয়ে হেঁটে আসতে গিয়ে প্রতিবারের
মতো সেবারও মনে হল
নকশাদার লোহার রেলিং অটুট, জাফরিতে
রোদের সুরভিত স্রোত
আর ভেঙে যাওয়া কাঠের সিঁড়িতে কে
যেন...
বলো, ভাঙন আর এগিয়ে আসা একসাথে
অনিবার্য ছিল?
No comments:
Post a Comment