Sunday, December 15, 2019

কবিতাগুচ্ছ- শ্রীজাতা কংস বণিক






শব্দ কল্প
প্রকৃত কান্নার ভাষা ভীষণ নীরব
মাটির তলার থেকে উঠে আসে ডাক
সেসব আওয়াজ মেশে মৃদু উচ্চারণে
আগুনে আগুন ঝড় নিবিড় স্বভাব ;
ভীষণ প্রলয় ঘোরে নৌকো উঠে আসে
জলের গভীর থেকে, তিন দিক ভাঙা
চরে বর্গী বসে আছে অন্ধকার হাতে
পৃথিবী লুকিয়ে খোঁজে রাজার ঠিকানা ।
#
জলের প্রবাহ জুড়ে চিকচিকে বালি
তাতেই ভেসেছে কত রাজার মুখোশ
ভাঙা ভাঙা আয়নাতে দেখা যায় মুখ
ঘুমিয়ে রয়েছে রাজা প্রবল অসুখ ।
#
পৃথিবী খুঁজেছে রাজা, ততোধিক বালি,
তিন দিকে ভাঙা ঢেউ আর সব খালি।

*******************





ধুলোর কবিতা

এখনো এখানে, ফুলের বাগান জুড়ে মায়া
ধানের বাগানে চাঁদ আর
জ্যোৎস্নায় ছায়া লেগে থাকে গ্রহণের।
এখনো গ্রহণ বলতে শুধু গিলে ফেলা চুল থেকে নখ
অথবা, নিঃশব্দ বেদনা নয়
#
এখানে জটিল কিছু নেই,
এই ছায়াজন্মের কাছে
গ্রহণ মূলত এক ঋণ...
#
জানিনা এখনো কেন, প্রয়োজন খুব বেশি নয়
বিঘা তিন জমি, তাতে বছরের ধান
আর মুখ গুঁজে সারাদিন চুপচাপ
ঘাসের উপরে মাথা
শিশুটিও জলপাড়ে হেসে খেলে
পার্থিব জটিল 'প্রয়োজন' ধুলোয় ওড়াবে
এটুকুই...
শুধু এটুকুই... ফুলের বাগানে থাক মায়া
মায়ার বাগানে আমি
আর সন্তানেরা...



মেঘজল

এসব কথার নীচে জমে আছে জল
জল বলা ভুল হবে,
ধরে নাও মেঘ
জমে আছে মেঘ-জল আমার উঠোনে,
মাটির দাওয়ার কাছে শূন্য দেওয়ালে।
#
কতকাল পার হয়ে
আজ এইখানে,
মেঘলা নকশা আঁকা দরজাটি খোলা
এসো রাত, এসো দিন
একা একা এসো
এখানে একার সঙ্গে একার আলাপ
এখানে আমার সঙ্গে আমারই পুরনো শবদেহ।
#
এসব কিছুর নীচে জল জমে আছে
এসব কিছুর পরে স্তব্ধ নিশাচর
একার কাঠামো গড়ে মাটি আর খড়।




ছায়াবাজি

সামান্য পিপাসা নিয়ে যারা পৃথিবীতে আসে
অথচ জলের কাছে পৌঁছতে পারে না কোনোদিন
তাদের অক্ষম বেদনায় মিশিয়ে দিয়েছি ঘুম...
এখনো ঘুমোয় তারা অবাধ্য অসুখ চোখে নিয়ে।
#
তৃষ্ণার সাথে ঘুমের মিলন দেখেছো কখনো?
ক্ষিদের সাথে লাম্পট্য অথবা গাছের সাথে তোমার...
তুমি কি দেখেছ
কীভাবে নিজের ঘুম, নিজেকেই অচেনা করে আরও?
#
আয়না রেখো সেইসব অচেতন মুহূর্তের পাশে
উৎসের মৃত্যু হলে, প্রতিবিম্ব বেঁচে থাকে আঘাতে আঘাতে।



No comments:

Post a Comment

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না  যে পিতা সন্তানের লাশ সনাক্ত করতে ভয় পায় আমি তাকে ঘৃণা করি- যে ভাই এখনও নির্লজ্জ স্বাভাবিক হ...

পাঠক-প্রিয়