জিরো ওয়াটের সায়েন্সফিকশন
বরফকুচি সাজিয়ে দিতেই শরীরের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থচ্ছেদ মাপে
প্রতি দ্রাঘিমায় কবিতা প্রতিক্রিয়া
#
যে নীরবতার জন্ম দেয়
সে ভয় থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে মুখোশ
১.
একটা ছেঁড়া পৃথিবীর সামনে দাঁড়িয়ে, যার পলেস্তরা খসা দেয়ালে
এবড়ো খেবড়ো ভাবে লেখা 'বিজ্ঞাপন মারিবেন না'। আমি
না দেখার ভান করে, অথচ দেখছি কীভাবে মহাকালের হিসু থেকে
গড়িয়ে পড়ছে টাটকা রোদ। একটা হাত-কাটা সময় ঝুল কালি মেখে
তোমাকে জড়ো করছে, এ তুমি ঠিক তুমি নয়
#
ছায়া নিবিড় আঁচলে আমার ধ্বংসাবশেষ...
২.
আমি কোনও টাইম-মেশিন নয়, আমার পকেটে সময়ের সরগম।
উলটে আঁচড়ানো প্রোফাইল পিক থেকে উঁকি মারে দ্বিখণ্ডিত
কৃষ্ণকলি। এরপর একটা জলপাই রঙের গোধূলি; হাঁটু ছেঁড়া জিন্সে
চুলবুল ভাইজান। পেঁয়াজের শল্কপত্রের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে আমার
সেভিংস একাউন্ট, একটা একটা করে জমিয়ে রাখা শীতকাল।
তোমার চোখে ফিউচারের অর্জুন
#
ট্রামরাস্তা বরাবর আরও কিছুটা এগোতেই স্পষ্ট হল বৈদিক জনপদ...
৩.
সাতকাণ্ড রামায়ণ পড়ার পর যারা মনে করেন
উট পাখির ডিম থেকে হ্যারি পটারের জন্ম, তাদের
মেধা নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই। সন্দেহ আসলে
সেই বেড়াল যাকে আমরা প্রতিদিন ভালোবেসে দুবেলা খেতে দিই,
নিজেদের প্রশ্বাসের মধ্যে সযত্নে লালন করি। আমাদের অসহায়তা
সেইসব না লেখা গল্প যেখানে পুরোটাই সত্য ঘটনা অবলম্বনে।
বাকি যা কিছু কুমিরডাঙা, মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে আমরা নিজেকেই খুঁড়ে তুলি...
#
খুঁড়ে তোলা আসলে মিউচুয়াল ফান্ড, সাবজেক্ট টু মার্কেট রিস্ক
৪.
প্রত্যেকটা দিন, প্রত্যেকটা উৎসব, প্রত্যেকটা বীজ
আসলে নতুন নতুন কৌশলের জন্ম দেয়। সভ্যতার বারকোডে
নতুন ভাবে লেখা হয় 'সামার অফ সিক্সটি নাইন'। প্রতিবার
নাইটমেয়ারের পর আমি সেই দরজাটা খুঁজে পেয়েছি। আমার
অর্ধেক অধিকার বাকি অর্ধেককে একটা অদৃশ্য চোখ উপহার দিয়েছে।
সেই চোখ থেকেই তোমার বয়েলিং পয়েন্ট। কোনও লুকোচুরি নয়।
এক আউন্স হিস্ট্রি দু-আউন্স বর্তমানের সঙ্গে বিক্রিয়ায়
আড়াই আউন্স ঐশ্বর্য...
#
বাকিটা তোমার হাসি জানে, আমার ল্যাপটপ জুড়ে
শিফট ডিলিটের খেলায় মেতেছেন জিরো ওয়াটের সারোগেট ঈশ্বর
৫.
নিজেকে ছিঁড়ে আবার জুড়ে দেওয়ার মধ্যে একটা অদৃশ্য থ্রিলার আছে।
রহস্য ভেদে ফা-হিয়েন হয়ে ওঠেন আজকের নিকোলাস। কিছুটা আকাশ
অধরা থাকাই ভালো। ভালো করে চুল ধুয়ে নেওয়ার পর ভালোবাসা
হাই তোলে। গভীর ঘুমে প্রাচীন হায়ারোগ্লিফ। আসলে বিশ্বাস
সেই অদৃশ্য ফ্রেম যার শরীরে যুগ যুগ ধরে লেগে আছে খেটে খাওয়া
মানুষের রক্ত ঘাম। আমি কৌশলে খুঁজে দেখি, এ এক আশ্চর্য্য নির্মাণ।
সময়টা গুপ্তযুগ। সেই চোখ, ধারালো আবেদন
#
প্রতীক্ষার বুদ্বুদ ফাটিয়ে 'কান্ট রিমেম্বার টু ফরগেট ইউ'- এক সমুদ্র শরীর
প্রাপ্তিযোগের নোনা গন্ধে সেঁকে নিচ্ছে তোমাকে, তুমি মেরিলিন
৬.
কিছু কিছু রাত অত্যন্ত দায়িত্বশীল, সংবেদনশীল ও বটে।
পুরোনো অ্যালবাম গুছিয়ে নিচ্ছে জুরাসিক সম্পর্ক। সম্পর্ক
অনেকটা তেল আর জলের মতো, একসাথে ভাসতে থাকে
কিন্তু মিশতে চায় না। শরীর হারিয়ে ঘন ঘন নিশ্বাস ফেলে দুপুর।
আমি বাড়ি ফিরলাম অথচ তুমি জ্যামে। তোমার রেটিনায়
যুবতী অক্টপাস। আমি পাশ ফেলের প্যাহেলু সাজিয়ে।
ইন্তেজার, থোড়া ইন্তেজার...
#
একটা দীর্ঘ সিঁড়ি ঘন হতে হতে পেনড্রাইভে ঢুকে যাচ্ছে।
রূপান্তরের আগে অন্তত একবার। আমার আত্মা জানে
এ শহর পাস ফিরে শুলেই লেখা হবে আর একটা কমলালেবুর গল্প
অথবা সায়েন্সফিকশন
৭.
বেঁচে থাকারও একটা স্লিপিং-মোড আছে,
একটা আধখাওয়া আপেল সাড়ে উনিশ ডিগ্রি অক্ষাংশে
তুলে ধরে সমস্ত মিথ। আপাতত একটা সিগারেট,
স্ক্র্যাপবুকে ফাল্গুনের শেষ হাসি
#
আমি গভীরতা খুঁজেছি গুগলে, বুঝে গেছি
কীভাবে ঈশ্বর মানুষ হয়ে ওঠেন
কীভাবে সন্ধে নামে বিকেলের ক্লিভেজে
#
আমি ফুটেজ দেখে খুঁজে নিতে চেষ্টা করি
বারোঘন্টা ডিউটির পর দু-ঘন্টা ওভারটাইম
#
বিশেষণের কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই
যা কিছু তোমার সে সবই অন্য কারো ছিল একদিন
৮.
আমার মাথার মধ্যে কমলারঙের বিপ্লব। নদী হয়ে যাওয়া
সম্ভাবনা আকাশগঙ্গা থেকে খুঁটে আনে উপোসী শব্দ। শব্দের
মায়াবী শরীরে খাজুরাহো মিশেছে। নিজেকে টিউন করতেই
টুকরো টুকরো ঘটনা জিরো পয়েন্ট উল্লাসে ফেটে পড়ে
#
ফেটে পড়ার আরেক নাম বিপ্লব। চেনা কক্ষপথ, চেনা শরীর
সেজে ওঠে মিথ্যে আত্মবিশ্বাস। সিকোয়েন্স ভুল হয়ে যায়
জল ভাঙে সহজিয়া গান। আমি ভাঙনের সূত্রে
তোমাকে খুঁজে পেয়েছি অথবা তোমার মতো কেউ
#
সে কথা সুন্দর জানে না, সুন্দরের বায়োপসি রিপোর্ট
মাধবীলতার কপালে অকাশ এঁকে দিল
৯.
ডিপ্রেশনের কোনো জিনম্যাপ হয় না, নিজেকেই খুঁড়ে তোল খনিজ
জীবন সেই অসম্পূর্ণ গানটার মতো একটা অর্ধেক বৃত্ত
বাকি অর্ধেক তোমাকে নিয়ে ট্রায়াল এন্ড এরর
#
আমি কথার পরবর্তী ধাপে নিজেকেই মুদ্রণ করেছি
পছন্দের কোটেশান প্রিয় আশট্রের গায়ে। রূপকথা নয়।
নিজেকে জমিয়ে জমিয়ে কথার ছাই
#
এসবকিছুর কোনো শিরোনাম দিতে পারিনি
লেখার আগেই গেয়ে উঠি রবীন্দ্রনাথ
১০.
টুডের সঙ্গে টুমরো মিশিয়ে দিলে কয়েক লক্ষ গুণ বেড়ে যায় গতিবেগ
রাজা-রানির গল্পে চেনা ক্লাইম্যাক্স আপাতত ট্রেডমিল সফরে যাবে
কিছু শব্দ তৈরি হওয়ার আগেই জেনে যায় কতটা গ্লাসে ভরে নিতে পারলে
গৃহপালিত মানুষ তাকে মিশিয়ে দেবে অক্ষরবৃত্তে
#
আমি ঘুমের মধ্যে অলীক খুঁজে দেখেছি, কীভাবে স্তম্ভিত চোখ
আলো থেকে নিশ্বাস তুলে আনে। একটা জন্ম, অনেককটা মৃত্যু,
কবিতা মুছে দেওয়া পালক আল্টিমেটলি একটা বাক্স উপহার দিয়েছে
#
বাক্স খুলতেই তোমার চোখে উনিশের সারভাইবাল অফ দি ফিটেস্ট
১১.
সে ছিল একটা হারিয়ে যাওয়া রং-পেন্সিল
পুরাঘটিত বিকেল। অঙ্কের কোচিং থেকে কম্পালসারি গাছ
#
গাছ সে তো আশ্রয়, আরও একটা উত্তরণ-পর্ব
আমি ছায়ার সামনে দাঁড়াই, আরোপিত
জীবনে নিজেকেই কালার-ব্লাইন্ড করেছে হ্যাবিট
#
কত অনায়াসে তুমি বলতে পারো,
সব বুঝেও এগিয়ে দিই আঙুল
#
শ্রেষ্ঠ ভালোবাসার কোনো শব্দ হয় না
সব দাগ মুছে গেলে কমে আসে আলোর অনুপাত
১২.
ভঙ্গিমার গ্রাফিকাল রিপ্রেজেন্টেশনে
অর্ধেক শরীর অর্ধেক ত্রিকোণমিতি থাকে
#
প্রয়োজনের অতিরিক্ত অক্সিজেন খাইবার-পাস হয়ে
যে নদী জন্ম দিল সেখানে স্নান করছেন চার্লস শোভরাজ
#
চোখ ধাঁধিয়ে- তীব্র আলো,
একটা সরলদোলক টেলিফোন রিসিভার
দৈতকণ্ঠে উঠে আসা পাখির ডাক
#
ইরা পিঙ্গলা সুষুম্না
১৩.
অন্ধকারকে বিশ্বাস করলে
একদল মাল্টিপল চয়েসের সামনে দাঁড়াতে হয়।
বাইফোকাল চশমায় যে উড়ান তা সেই অর্থে
স্বাধীনতার চেয়ে কম হাস্যকর নয়।
সৃষ্টির সমস্ত সূত্র টেস্টটিউব থেকে
মাইক্রোস্কোপ হয়ে ধরা দেয় রেটিনায়...
#
আমরা দৃশ্যকে ধরে রাখি স্মৃতিতে,
স্মৃতিরা শর্টসার্কিট হলে
দাম্পত্য ও বিচ্ছেদ অনালজিকালি ওবেসিটির কারণ হতে পরে
১৪.
জীবনের ব্যাসবাক্য-সহ সমাসে মরুভূমির উল্লেখ থাকে না।
আমাদের ভালো থাকার উপকরণ থেকে তৈরি হয়
এই শহরের জিনম্যাপ
#
আমরা ঐতিহ্যের সাথে সময়ের মেলবন্ধন খুঁজি
#
প্রতিটা চক্রব্যুহে পাহাড় থেকে জঙ্গল থেকে
সহজাত প্রতিভারা আশ্রয় নেয়,
নপুংসক চাঁদ জানে কুরুক্ষেত্রের কথা
#
সার্ভে করতে বসলে জীবনবিমার শহরটা
এক ছাতা থেকে আর এক ছাতার নীচে
১৫.
বিস্ময়ঘোর কাটতেই রাতের মজ্জায় ঢুকে পড়ে দিনের শিলালিপি।
সিঁড়িতে থমকে দাঁড়াই।
সময়ের বনসাই জন্ম দেয় টিউলিপ ফুল
#
রাতের গায়ে যেসব স্বরলিপি জড়িয়ে, তারা
সরলরেখা বরাবর মিশ্র অনুপাত রচনা করে
#
এটা অনেকটা ক্যাজুয়াল লিভের মতো
শূন্যের কোটেশানে নদীর কথা লুকিয়ে রাখে প্রেমিক
No comments:
Post a Comment