Sunday, December 15, 2019

কবিতা চয়ন ভৌমিক






বাষ্পায়ন

১)
হঠাৎ-ই হিম নেমে আসে। ঘন ধোঁয়া হয়ে যায় নদী-বুক। পাড়ে আটকে পড়ি, ওপার সম্বন্ধে ধারণা করি কিছু, ভাবি হয়তো বাস ছেড়ে চলে যাবে সময় মতোই, আর আমার দেরী দেখে বন্ধ হয়ে যাবে কারখানার গেট। আমি দিক বুঝতে চেষ্টা করি। শূন্যের কোনো দিক নেই, শুধু এক-মাত্রার গ্রাস আছে অনন্ত। আর আছে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য উৎকন্ঠিত জন কোলাহল।
আশ্চর্য, একা মাঝি এতজনকে পার করবে কী করে ?
২)
ওই তো নীলচে ধুলোর ত্রিভুজ, নিওন তুলি। গোলাকার প্রজেকশনের নীচে অপেক্ষার ছায়া। এইবার শুরু হবে স্বপ্ন সিকোয়েন্স। এখন রাস্তা সুনসান। ক্রমে বেরিয়ে আসছে ঘুমের শব্দ। ল্যাম্পপোস্ট গুলো এক-একটা ভবঘুরে যেন, এখন স্থানাঙ্কে অচঞ্চল। মায়া আস্তে আস্তে দখল নিয়ে নিচ্ছে রাতের অবয়ব।
এত রাতে তুমি রোজ ফিরতে বাবা। আর আমি এখনো তাকিয়ে থাকি সেই ফিরে আসার পথে।

৩)
নির্লিপ্তির আলোয়ান জড়িয়ে বেরিয়ে পড়েছি। শীত বাসা বাঁধছে অঘ্রাণের শরীরে। শিশির বিন্দু ঘাস ধুয়ে দিলে – মনে পড়ে র‍্যাম্প-ওয়াকের দিন এগিয়ে এল প্রায়। উৎসব জেগে উঠবে এবার পয়ারের লিপস্টিকে। মুদ্রণ প্রমাদ লুকিয়ে থাকবে বর্নালী মলাটের অন্দরে। ভিড় ঠেলে যেতে আর ভালো লাগে না জানো । মাথার চারপাশে জমে আছে বাল্যকাল আর উলের গোলার নিঃস্ব গড়িয়ে যাওয়া স্তব্ধতা। মনে পড়ে উনিশের নামতা পড়তে গিয়ে আমরা হারিয়ে গিয়েছিলাম এক ঘুমন্ত দুপুরের গভীরে। আর সন্ধ্যায় যখন বাড়ি ফিরতাম –
তখন এক আশ্চর্য ধুপের গন্ধ কুজ্ঝটিকা হয়ে বলে যায় – জীবন ফুসমন্তর। আর সোয়েটার - মায়ের নরম উষ্ণতা।



No comments:

Post a Comment

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না  যে পিতা সন্তানের লাশ সনাক্ত করতে ভয় পায় আমি তাকে ঘৃণা করি- যে ভাই এখনও নির্লজ্জ স্বাভাবিক হ...

পাঠক-প্রিয়